মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ব্রেক্সিট কার্যকরের পর থেকেই নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যাছে যুক্তরাজ্য। সঙ্কুচিত হয়েছে বৈদেশিক বাণিজ্যের পথ। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে। দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির মুখে পড়েছে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা ও মজুরি। সবমিলিয়ে আরো ভয়াবহ হছে জীবনযাত্রার সঙ্কট। নতুন একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ব্রেক্সিটের কারণে যুক্তরাজ্যের প্রত্যেক কর্মী প্রতি বছর গড়ে ৪৭২ পাউন্ডেরও বেশি বেতন হারাছেন। ২০৩০ সাল পর্যন্ত এ ক্ষতি অব্যাহত থাকবে। ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে এ অনুমান করা হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান। ব্রিটিশ থিংকট্যাংক রেজল্যুশন ফাউন্ডেশন ও লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের (এলএসই) শিক্ষাবিদরা এ গবেষণা পরিচালনা করেছেন। ইইউ থেকে বেরিয়ে আসা নিয়ে অনুষ্ঠিত গণভোটের ছয় বছর পরের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ব্রেক্সিট বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাজ্যের রফতানির প্রতিযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ঠিক যেভাবে কভিড-১৯ মহামারী ও ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের ফলে সৃষ্ট রেকর্ড মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় বাধ্য করা হছে। ফলে একটি কম উন্মুক্ত গ্রেট ব্রিটেন দরিদ্র ও কম উৎপাদনশীল হবে বলে আশঙ্কা করা হছে। মে মাসে যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এপ্রিলেও এ হার ৯ শতাংশ ছিল। এক বছর আগের তুলনায় পেট্রলের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে এবং ক্রমবর্ধমান মুদিপণ্যের দাম দরিদ্র পরিবারগুলোর ওপর অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা চাপিয়েছে। মাসভিত্তিক হিসাবে গত মাসে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। এভাবে আগামী অক্টোবরের মধ্যে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ১১ শতাংশে পৌঁছতে পারে বলে সতর্ক করেছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। রেজল্যুশন ফাউন্ডেশন ও এলএসইর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেক্সিটের কারণে ২০৩০ সাল পর্যন্ত উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর ফলে সৃষ্ট উচ আমদানি ব্যয় পরিবারগুলোকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে। গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে, ব্রেক্সিটের পর ব্রিটিশ অর্থনীতির উন্মুক্ততা সঙ্কুচিত হওয়ায় ২০৩০ সালের মধ্যে শ্রম উৎপাদনশীলতা ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমে যাবে। এটি গত এক দশকে অর্জিত দক্ষতা অর্জনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। মন্ত্রীরা যুক্তি দিয়েছেন, উৎপাদনশীলতা সমর্থিত হলেই কেবল ব্রিটিশ কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি টেকসই হবে। যা-ই হোক, ব্রেক্সিটের পর ব্রিটিশ অর্থনীতিতে কর্মী দক্ষতায় পতনের পাশাপাশি বেতনও কমে যাবে। গবেষকরা বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মূল্যস্ফীতি-সামঞ্জস্যপূর্ণ বেতন ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে যাবে। এটি প্রত্যেক ব্রিটিশ কর্মীর বছরে ৪৭২ পাউন্ড ক্ষতির সমান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের শুরুতে ব্রাসেলসে ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তির কারণে ইইউতে যুক্তরাজ্যের রফতানিতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। তবে সামগ্রিকভাবে যুক্তরাজ্য এখন বৈশ্বিক বাজারগুলোর সঙ্গে কম উন্মুক্ত এবং কম প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ ইইউতে যুক্তরাজ্যের রফতানি জোটটি থেকে বেরিয়ে না এলে যেমন হতো তার তুলনায় ৩৮ শতাংশ কম হবে। রেজল্যুশন ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী টরস্টেন বেল বলেন, ব্রেক্সিট কভিড-১৯ মহামারী থেকে পুনরুদ্ধার এবং জীবনযাত্রার সঙ্কটের পরে টেকসইভাবে মজুরি বাড়ানো আরো কঠিন করে তুলবে। ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি খুবই বেদনাদায়ক। এটি মোকাবেলা করা সর্বদা কঠিন ছিল। তবে ১৫ বছর ধরে মজুরি স্থবির থাকা পরিবারগুলোর জন্য এটি অনেক বেশি ভয়াবহ। এজন্য এখন টেকসই পথ হলো, আমাদের শক্তিশালী এবং উৎপাদনশীলতা সমর্থিত মজুরি বৃদ্ধি করতে হবে। কভিড-১৯ ও ব্রেক্সিট এ পরিস্থিতিকে কঠিন করে তুলেছে। তবে যুক্তরাজ্যের যথেষ্ট অর্থনৈতিক শক্তি রয়েছে এবং আমাদের জরুরিভাবে অর্থনৈতিক কৌশল ঢেলে সাজাতে হবে। গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।